Antipsychotics ( অ্যান্টিসাইকোটিক )

Antipsychotics বা অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধগুলি মূলত মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে সাইকোসিস বা মনোবিকারের লক্ষণগুলি উপশম করতে সাহায্য করে। সাইকোসিস এমন একটি মানসিক অবস্থা যেখানে ব্যক্তি বাস্তবতাকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারে না।

এই ওষুধগুলি নিম্নলিখিত পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হয়:

  • সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia): এটি অ্যান্টিসাইকোটিক ব্যবহারের প্রধান ক্ষেত্র।
  • বাইপোলার ডিসর্ডার (Bipolar Disorder): ম্যানিক বা অতি-উল্লাসের পর্ব নিয়ন্ত্রণে এবং মুড স্টেবিলাইজারের সাথে ব্যবহার করা হয়।
  • সিজোঅ্যাফেক্টিভ ডিসর্ডার (Schizoaffective Disorder): সিজোফ্রেনিয়া এবং মুড ডিসর্ডারের লক্ষণগুলির সমন্বিত অবস্থায় এটি ব্যবহার করা হয়।
  • গুরুতর বিষণ্ণতা (Severe Depression): যখন বিষণ্ণতার সাথে সাইকোটিক লক্ষণ থাকে, তখন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টের সাথে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে অ্যাংজাইটি, ওসিডি (Obsessive-Compulsive Disorder), পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসর্ডার (PTSD) এবং ডিমেনশিয়া (Dementia)-এর কারণে সৃষ্ট উত্তেজনা ও আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণেও এটি ব্যবহার করা হয়।

অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধগুলি কীভাবে কাজ করে?

এই ওষুধগুলি মস্তিষ্কের কিছু রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্য পরিবর্তন করে কাজ করে, বিশেষ করে ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যকলাপ কমিয়ে দেয়। মনে করা হয় যে মস্তিষ্কে ডোপামিনের অতিরিক্ত কার্যকলাপ সাইকোসিসের লক্ষণগুলির জন্য দায়ী। কিছু নতুন অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ সেরোটোনিনের মতো অন্যান্য নিউরোট্রান্সমিটারকেও প্রভাবিত করতে পারে।

অ্যান্টিসাইকোটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধগুলির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে, যা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল:

  • ঘুম ঘুম ভাব
  • ওজন বৃদ্ধি
  • উচ্চ কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি
  • অস্বাভাবিক শারীরিক নড়াচড়া (যেমন কাঁপুনি, পেশী শক্ত হয়ে যাওয়া, অস্থিরতা) - এটি প্রথম প্রজন্মের ওষুধে বেশি দেখা যায়।
  • উচ্চ প্রোল্যাকটিন স্তর (যা মহিলাদের ক্ষেত্রে স্তন থেকে দুধ আসা এবং মাসিক অনিয়মিত হওয়া, এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে স্তন বড় হওয়ার কারণ হতে পারে)
  • শুষ্ক মুখ
  • দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • নিম্ন রক্তচাপ (দাঁড়ালে মাথা ঘোরা)
  • হৃদস্পন্দনের অনিয়মিততা

নতুন প্রজন্মের অ্যান্টিসাইকোটিকগুলিতে কিছু বিশেষ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে, যেমন মেটাবলিক সিনড্রোম (ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিসের সমন্বয়)।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

  • অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধগুলি অবশ্যই একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিত।
  • ডোজ এবং চিকিৎসার সময়কাল রোগীর অবস্থা এবং ওষুধের প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভর করে।
  • চিকিৎসা চলাকালীন নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখা এবং কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তা জানানো জরুরি।
  • হঠাৎ করে ওষুধ বন্ধ করা উচিত নয়, কারণ এর ফলে লক্ষণগুলি আবার দেখা দিতে পারে বা অন্যান্য সমস্যা হতে পারে।
  • গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

মনে রাখবেন, অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধগুলি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং অনেক মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করে। তবে, এর ব্যবহার সম্পর্কিত সঠিক জ্ঞান এবং ডাক্তারের তত্ত্বাবধান অপরিহার্য।

Antipsychotics এর উদাহরণ: