Antifungals ( অ্যান্টিফাঙ্গাল )

Antifungal ঔষধ হলো সেই ওষুধ যা ছত্রাকজনিত সংক্রমণ (fungal infection) এর চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ওষুধগুলি ছত্রাকের বৃদ্ধি বন্ধ করে অথবা ছত্রাককে মেরে ফেলে কাজ করে। বিভিন্ন ধরণের ছত্রাক রয়েছে এবং সেই কারণে বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধও রয়েছে, যা নির্দিষ্ট ধরণের সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য কাজ করে।

বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ:

তাদের কাজের পদ্ধতি এবং রাসায়নিক গঠনের উপর ভিত্তি করে অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধগুলিকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়:

  • অ্যাজোলেস (Azoles): এটি একটি বহুল ব্যবহৃত অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের শ্রেণী। এরা ছত্রাকের কোষ প্রাচীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এরগোস্টেরল (ergosterol) তৈরিতে বাধা দেয়। এর ফলে ছত্রাকের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। এই শ্রেণীর কিছু পরিচিত ওষুধ হলো:
    • ফ্লুকোনাজল (Fluconazole)
    • ইট্রাকোনাজল (Itraconazole)
    • কেটোকোনাজল (Ketoconazole)
    • ক্লোট্রিমাজোল (Clotrimazole)
    • মিকোনাজল (Miconazole)
  • পলিইনস (Polyenes): এই ওষুধগুলি ছত্রাকের কোষ প্রাচীরের এরগোস্টেরলের সাথে আবদ্ধ হয়ে ছিদ্র তৈরি করে, যার ফলে কোষের ভেতরের উপাদান বেরিয়ে যায় এবং ছত্রাক মারা যায়। এই শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ হলো:
    • অ্যাম্ফোটেরিসিন বি (Amphotericin B)
    • নিস্ট্যাটিন (Nystatin)
  • অ্যালিল্যামাইনস (Allylamines): এই ওষুধগুলিও এরগোস্টেরল তৈরির পথে একটি এনজাইমকে বাধা দেয়, কিন্তু অ্যাজোলেসদের থেকে ভিন্ন ধাপে। টার্বিনাফাইন (Terbinafine) এই শ্রেণীর একটি পরিচিত ওষুধ।
  • ইকিনোক্যান্ডিনস (Echinocandins): এটি তুলনামূলকভাবে নতুন শ্রেণীর অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ। এরা ছত্রাকের কোষ প্রাচীরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বিটা-ডি-গ্লুকান (beta-D-glucan) তৈরি হতে বাধা দেয়। এই শ্রেণীর ওষুধগুলি সাধারণত গুরুতর ছত্রাক সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ:
    • ক্যাসপোফাঙ্গিন (Caspofungin)
    • মাইকাফাঙ্গিন (Micafungin)
    • অ্যানিডুলাফাঙ্গিন (Anidulafungin)
  • অন্যান্য অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ: এছাড়াও আরও কিছু অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ রয়েছে যারা ভিন্ন মেকানিজমে কাজ করে, যেমন:
    • ফ্লুসাইটোসিন (Flucytosine)
    • গ্রাইসোফুলভিন (Griseofulvin)

অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধগুলি বিভিন্ন ধরণের ছত্রাক সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়, যেমন:

  • ত্বকের সংক্রমণ: দাদ (ringworm), অ্যাথলেট'স ফুট (athlete's foot), জক ইচ (jock itch), ত্বকের ক্যানডিডিয়াসিস (cutaneous candidiasis)।
  • নখের সংক্রমণ: নখের ছত্রাক সংক্রমণ (onychomycosis)।
  • মুখের সংক্রমণ: মুখের ক্যানডিডিয়াসিস (oral thrush)।
  • যৌনাঙ্গের সংক্রমণ: ভ্যাজাইনাল ক্যানডিডিয়াসিস (vaginal thrush)।
  • অভ্যন্তরীণ সংক্রমণ: ফুসফুস, রক্ত, মস্তিষ্ক বা অন্যান্য অঙ্গের গুরুতর ছত্রাক সংক্রমণ (যেমন অ্যাসপারজিলোসিস, ক্রিপ্টোকক্কাল মেনিনজাইটিস)। এই ধরণের সংক্রমণের চিকিৎসা সাধারণত হাসপাতালে ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়।

অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ বিভিন্ন রূপে পাওয়া যায়:

  • টপিক্যাল (Topical): ক্রিম, লোশন, পাউডার, স্প্রে বা নেইল ল্যাকার যা সরাসরি আক্রান্ত স্থানে লাগানো হয় (ত্বক বা নখের সংক্রমণের জন্য)।
  • ওরাল (Oral): ট্যাবলেট, ক্যাপসুল বা তরল যা মুখ দিয়ে খাওয়া হয় (অভ্যন্তরীণ বা গুরুতর সংক্রমণের জন্য)।
  • ইনজেকশন (Injection): শিরায় ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয় (গুরুতর, জীবন-হুমকির সম্মুখীন সংক্রমণের জন্য)।
  • ভ্যাজাইনাল সাপোজিটরি (Vaginal suppository): যোনিতে ব্যবহারের জন্য (ভ্যাজাইনাল থ্রাশের জন্য)।

অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ওষুধের ধরণ, ডোজ এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো:

  • টপিক্যাল ওষুধের ক্ষেত্রে: চুলকানি, জ্বালা, লালচে ভাব, ফুসকুড়ি।
  • ওরাল ওষুধের ক্ষেত্রে: বমি বমি ভাব, বমি, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, লিভারের সমস্যা (বিরল)।
  • ইনজেকশনের ওষুধের ক্ষেত্রে: জ্বর, ঠান্ডা লাগা, শরীরে ব্যথা, অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া, কিডনির সমস্যা (অ্যাম্ফোটেরিসিন বি এর ক্ষেত্রে)।

গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

 

অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহারের আগে কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত:

  • ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়।
  • গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মহিলাদের অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • অন্য কোনো ওষুধ সেবন করলে ডাক্তারকে জানাতে হবে, কারণ কিছু অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ অন্যান্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে।
  • চিকিৎসার পুরো কোর্সটি সম্পন্ন করা গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি উপসর্গগুলি চলে গেলেও। অন্যথায় সংক্রমণ ফিরে আসতে পারে।

মনে রাখবেন, অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের বিস্তারিত তথ্য এবং ব্যবহারবিধি আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নেওয়া সবচেয়ে ভালো। তিনি আপনার সংক্রমণের ধরণ এবং শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে সঠিক ওষুধ নির্বাচন করবেন এবং ব্যবহারের নিয়মাবলী সম্পর্কে আপনাকে অবগত করবেন।

Antifungals এর উদাহরণ: